Thursday 3 February 2022

শম্পা বণিকের তিনটি কবিতা --

শম্পা বণিকের তিনটি কবিতা --

 রোড শো ২০২১ 
------------------------
আলাদিনের চিরাগ হাতে ওই আসে গণতন্ত্র
রামধনু পায়রা উড়িয়ে......
কালো কালো মাথাগুলো কালোজাম মনে হয়
কথার ভাইরাস গলা বেয়ে নেমে
কাদার লোহিত স্রোতে হাড়হিম নর্দমার
রোড শো মিলিয়ে গেলে
রাস্তাটা ঝিমায় সন্ধ্যায়

 ওই ওরা আসে অন্ধকারে
প্লাস্টিক মোড়া চুপি চুপি মিছিলে
আবার ...আবার...আবার....
আরও ...আরও...
রোড শো করতে করতে চলে যায়
পরিচয়হীন
অশ্রুহীন
বর্ণহীন
পতাকা হীন

পথ কষে চলে, আজ কাল পরশুর অঙ্ক.......

------------------------------
২)

 এসো ছুঁয়ে ছুঁয়ে থাকি / শম্পা বণিক
-------------------------------
অ্যাম্বুলেন্সের আর্তনাদে বালিশ চাপা দেয় কান
চোখ খুললেই প্লাস্টিক মোড়া এ কোন ন্যাড়াপোড়া.......
আগুন ভেজে নিজের কান্নায়
বারুদ ছড়ানো মাঠেঘাটে
মিউজিক্যাল চেয়ারে ঘোরে মানবতার শব
তবু তোমার আমার ঘরে ঘরে উৎসব !
থামো
এসো পালন করি
দু মিনিট নীরবতা.......
মানুষে মানুষে এসো ছুঁয়ে ছুঁয়ে থাকি
শিরদাঁড়া খুঁজে পাবই পাব ঠিক
থামো
এসো পালন করি এবার
দু মিনিট নীরবতা......

----------------------------

৩)
তবু ফিরে যেতে হয়/ শম্পা বণিক
------------------
গতরাতে যে মেয়েটার স্বপ্নগুলো জলছবি হয়ে গেলো
সেও একদিন কাগজওয়ালার কাঁধে তুলে দেবে সব
বিষন্ন ভোর কেটে গেলে, নিয়মে........
আলোয় ফেরাই জীবনের নিয়তি
বুঝেছিলাম সেদিন যেদিন এক কাকভোরে
ধোঁয়ার কুণ্ডলী বেয়ে আকাশের ক্যানভাসে 
লেগেছিল তেতো বাৎসল্যের রং
ওরা জল ঢেলে তেতো কেটেই ফিরেছিল ঘরে
বিষন্ন ভোর ছুঁয়ে নেমেছিল আলোর সকাল, নিয়মে.......

সামিয়ানা উড়ে গেলেও
এভাবেই ভেজা ভোরেরা আসে দেখেছি প্রতিবার
তবু ফিরে যেতে হয় .....
পৃথিবীর আলোর আয়োজনে ।
ফিরে যেতে হয় কবির গানে........
"আরও বেদনা আরও বেদনা প্রভু দাও মোরে আরও চেতনা"........
আরও আলো আরও আলো এই নয়নে প্রভু ঢালো"

Wednesday 12 January 2022

সাবিত্রী দাসের দুটি কবিতা--

সাবিত্রী দাসের দুটি কবিতা --
ভালোবেসে

জ্যোৎস্না চুঁয়েছে স্বপন ছুঁয়েছে মৌন মুখর প্রাণে
দিগন্তে মেঘ হাতছানি দিয়ে সোনালী স্বপন আনে।
মায়াবী সে মেঘ ঝুঁকে ঝুঁকে আসে স্বপ্নের সিঁড়ি বেয়ে,
পরীদের সাথে আনন্দে মাতে জ্যোৎস্নার গান গেয়ে।
হয়তো বা কেউ নীরবে নিভৃতে দিন গোনে একা একা ,
মনেও পড়ে না কবে যেন তার হয়েছিল শেষ দেখা।
বুকের আগুনে আগুন নিভেছে হতাশ দীর্ঘশ্বাসে,
তবুও জীবনে জীবন জুড়েছে অযথা সর্বনাশে।
                  
তুমি এলে
সাবিত্রী দাস

তুমি এলে বোধের গভীরে সূর্য ওঠে,
  অনুভবে কত বোঝা-পড়া।
ইমনের মূর্চ্ছনা কিংবা কখনো বেহাগে
    মূর্ত জীবনের জলছবি।

স্বপ্নেরা নিরন্তর ভেসে যায়, নিয়ত প্রবাহে
     অনুভবে কত ওঠা-পড়া !
বুকের গভীরে অলক্ষ্যে বেজে যায়.....
     বিদায় বেলার অনন্ত ভৈরবী।

Thursday 6 January 2022

হৃদয়ের ভাষা--সীমা ব্যানার্জী রায়

রেপ্লিকা


রেপ্লিকা হৃদয়ের ভাষা
সীমা ব্যানার্জী রায়

হৃদয়ের ভাষা লক্ষ্যে হয়েছে অতীত 
ধরা তো যায় না, বাকশূন্য রহিত
ভাবলেশহীণ দৃষ্টি গিয়েছে দূরে
অক্লেশে কেন আমাকে রেখেছে ধরে

দলছুট কারা আমারই ছাতার নিচে
বাউলবাগানে ভ্রমরা ঘুরছে মিছে
পাটেপাট করা ভুলগুলো বুঝে গেছে
জয় পরাজয়ের ছায়াটি সঙ্গে আছে।

ভালোবাসার বর্ণ খসে পড়ে
তুমি তিতুমীর নকশা দ্বিপ্রহরে 
বুঝি না কিছুই, সবই কল্পনা ডানা
অবসোলিট প্রাণের রেপ্লিকা বয়ে আনা।

জয়া গোস্বামীর তিনটি কবিতা --

জয়া গোস্বামীর তিনটি কবিতা --

"শৈশবের স্মৃতি"

হিমেল শীতের সকালে  কিংবা কুয়াশাচ্ছন্ন ভোরে ,
স্মৃতিচারণ করি শৈশবের পাতায় আনমনে বিভোরে!
হারিয়ে যাই  কখন ও চেনা  রাস্তা ধরে বহুদূরে,
যেখানে শৈশব ছিল পড়ে, স্মৃতি আসে ফিরে!! 

ডোবাপুকুরে  সবাই মিলে  সেদিন তুলেছি শামুক ,
আবার তুলেছি  দুপুরে সেদিন খেলার ছলে শালুক !!
বাধাহীন ভাবে এ মাঠ ও মাঠে সেদিন মন হারাতাম ধানের ক্ষেতে কখনও বিলের পাড়ে ও ঘুরে বেড়াতাম !! 

প্রকৃতির অমোঘ টানে নিজেকে বারে বারে খুঁজে বেড়াই 
কখন ও চোরের মত  হানা দিতাম পাখির বাসায় সবাই!!
দস্যিপনা করে নিজের ঘরে , শান্ত মেয়ে হয়ে ফিরতাম!
দিনের শেষে মায়ের কাছে কত অভিযোগ না শুনতাম !!
শৈশবটা  হারিয়ে গেছে  সেদিন সময়ের স্রোতের টানে কি হবে আজ আবার  অতীতটা স্মৃতির পাতায় এনে!!
কেউ বোঝেনা শৈশবের মনের অতীতের করুণ যন্ত্রণা
বন্দী করে মনটাকে ,স্মৃতিটা আর ফিরিয়ে দেয়না!!

শৈশবটা স্মৃতির পাতায়  আজ আছে অবহেলায় পড়ে, কখনও  দেখি মনের ইচ্ছেতে  ব্যথাতুর অন্তরে!!
খেলার পুতুল আছে ঘুমিয়ে অনাদরে মেঝেতে পড়ে, হারিয়ে যাই ভাবনার ভাব জগতে অন্ধকারে!! 
এক্কাদোক্কার স্মৃতি আসে  ফিরে অজান্তে মনের কোণে , নিজেকে হারাই কবিতার পাতাতে বিধ্বস্ত হয়ে আনমনে!!
ফিকে স্মৃতি রঙিন করে কাব্য সাজাই নিজের ক্যানভাসে স্মৃতির ঘরে শিরোনাম খুঁজে বেড়াই ভালোবেসে!!

"পাহাড়ের প্রেমে"

ফিরে ফিরে আসি খেয়ালি মনে, বুঝতে পারিনা..
হয়ত হৃদয় খোঁজে,  সেটাই কারণ,মন মানেনা..
যত দেখি দু"চোখে  আশা যে আমার মেটেনা ..
এক বার মন চায় ছুঁয়ে দেখতে বলতে পারেনা.. 

ইচ্ছে করে একবার ভালোবাসার  পরশ নিতে...
স্মৃতির বিজন ঘরে তোমাকেই নিয়ে মাততে...
উষ্ণ আলিঙ্গনে বেহুঁশ করো মনের পাতাতে...
এক বার চাই তোমাকে আমার বাহুডোরে পেতে... 

প্রথম দেখা আমার তোমাকে জ্যোৎস্না রাতে ..
ভয় পেয়ে মুখ ঢেকেছিলাম আমার দু-হাতে ..
এমন রূপে আমি স্তম্ভিত ,সেদিন কল্পনার জগতে..
আমার মনের ক্যানভাসে ধরা তোমারই ছবিতে.. 

পাহাড় নাকি বোবা বলে না  কিছু মনের কথা, ....
অবাক হয়ে চেয়ে দেখে রুপসী মেয়ের মনের ব্যথা..
আমি ছুটে ছুটে  আসি নিবিড়  ভালোবাসার  টানেতে ..
ভেসে যাই  তোমার  প্রেমের গভীরতাতে গহীন রাতে... 
পাইনের বন তোমাকে নিয়ে মাতে মধুর রাতে..
মন হারাই আমি নিঝুম রাতে কবিতার অজুহাতে...
দেখি ঝর্ণা  তোমার হৃদয়হরণ করে নিশি রাতে...
তোমার আলিঙ্গনে ঝড়ে পড়ে নিজের ইচ্ছেতে... 

পাহাড়ের নিঃস্তব্ধতায় আমার মন ব্যাকুল হয়ে....
আমি ও নিজেকে হারাই পাহাড়ের কাছে গিয়ে...
কবিতার পাতাতে বন্দী  থাক রঙিন কাব্য দিয়ে...
আমার ভাবনা শুধু আজ ঐ পাহাড়কে নিয়ে...

স্রোতের টানে 

সীমাহীন বালুরাশি দিগন্তে আজ কেমন মিশে গিয়েছে
এই মরুপ্রন্তে এসে মন প্রশ্নের সাথে  মোকাবিলা করে চলেছে!! 
দেখছি শূন্যতা আমাকে কেমন গ্রাস করে নিচ্ছে,
যেভাবে ঢেউ গুলো আছড়ে পড়ে পাড় ভাঙছে! 

একা শুনছি নোনা জলের কান্না অন্তর পুড়ছে,
বিকেলে দেখেছি ক্লান্ত পাখিরা নীড়ে ফিরছে! 

বুকে মরুঝড় আথালি পাথালি করেই চলেছে,
গড়ছে এক পাড় ভাঙছে ,ভাঙাগড়ার খেলা খেলছে!! 
আমার তপ্ত বুকে হৃদয় ভাঙার আজ ঝড় উঠেছে,
সকালের নীল আকাশ  উদভ্রান্তের  মত উড়ে চলেছে!! 
মন আমার মরুভূমিতে যে কেনো  পরিণত হয়েছে?
খুঁজি আমি এক মুঠো সুখ এই পড়ন্ত বিকেলের কাছে!! 
নিষ্ফল হই শুষ্ক মরু তটে এসে  দিগন্তের কাছে,
কত অভিমান বুকে নিয়ে মন সমুদ্রের কাছেই ছুটছে!! 
ভাঙা মনে এক অন্তহীন বেদনা স্পর্শ করেছে,
ক্লান্ত মন কি যেনো অনন্তে একা খুঁজে বেড়াচ্ছে ! 
ভালোবাসা আজ মরিচিকা আবেগে স্বপ্নে ধরা দিয়েছে, তোমার ভয়ঙ্কর রূপে মন আজ ভয়ে ভীত হয়েছে! 

উত্তপ্ত বালুরাশি আজ কোন মায়াতে  শুধুই টানছে,
আকুল ব্যাকুল তোমার পরশেই মন জাগরিত হচ্ছে!! 
ফিরে আসি তোমার উষ্ণতায় পাবার জন্য মন কাঁদছে,
সমুদ্রের স্মৃতি অনন্ত ভালোবাসায় স্রোতের টানে বয়ে চলেছে!!

দ্বৈরথ / পৃথা রায় চৌধুরী

দ্বৈরথ / পৃথা রায় চৌধুরী 

অন্দরের জমিন রুইয়ে গড়ে উঠেছে আকাশ সমান ঘূর্ণিঝড় 
মিশে আছে ভোগ বনাম শ্লাঘার মেলামেশা বরফকুচি। 
একেই বুঝি ইলশেগুঁড়ি বলে। 
ও আতরদান, গলায় কোথাও রাতজাগা মন্দ্রস্বরে নির্দেশ, 
ঘুম যাও। 
যাও ঘুম, ক্রমাগত বেজে চলে মহাপ্রলয়ের ডমরু 
কে বলে বাম অঙ্গ অসাড় করে উঠে আসছে প্রবাদকালের রক্ষক 
তার নখে, দাঁতে, হিংস্রতায় লেগে থাকে কুসুমভোর। 
এক আঙ্গুল, দু আঙ্গুল ছুঁয়ে ছুঁয়ে দেখে নেওয়া 
আত্মবিশ্বাসের অহংকার। 
জেগে আছো পুরাতনী অন্ধকার, 
ক্রমাগত বুকে ঘষটে আসা ছোবলের নিশানায় নতজানু সন্ত্রাস। 
স্তম্ভে স্তম্ভে ফেটে আসে বসন্তহাসির উপহার হাতে... জন্মমৃত্যুহীন।

পলাশ পালের দুটি কবিতা --

.
পলাশ পালের দুটি কবিতা --
১.
মুক্তির কথা

মাটির প্রাসাদের ওই ভগ্ন স্তূপে আজ‌ও
মোমবাতিরা পরলোকগমন করে।
মরুভূমির সংসারে খুশির বৃষ্টি আসলেই
ক্যাকটাসের আধুনিকতা নষ্ট হয়,
তবুও আমি হারিয়ে যাই এই বিভৎসতায়।
কথার সাথে কথার যুদ্ধ আমায়
টেনে নিয়ে যায় প্রাসাদের বাইরে,
যেখানে বিরহ মাখা কুঁড়ে ঘরের
ভেজা মাটির সুবাস মুক্তির কথা বলে 
আর সেই জোনাকিটা সন্ধ্যার প্রেমে পড়ে।


২.
কথা

প্রতিদিনই সন্ধ্যা এলেই জীবন্ত আলোর প্রতিফলন
বাস্তব চিনিয়ে দেয় আমায়।
পথ হারালেই একটু একটু করে জেগে ওঠে
আমার অব্যক্ত ইচ্ছে গুলো।
ফিকে হয়ে আসে সবুজের মখমলতা,
তবুও অবসর নেয় না ভন্ড আগাছারা।
তাইতো আমি ভালোবাসা দিয়ে বোনা
ফাঁদ পেতেছি 
মুহূর্ত গুলো আবেগের খাঁচায়
বন্দী করবো বলে।
কথারা আজ অপেক্ষায়
কথাদের ভিড়ে হারিয়ে যেতে।

বীরেন্দ্রনাথ মন্ডলের দুটি কবিতা --









বীরেন্দ্রনাথ মন্ডলের দুটি কবিতা --

ধাঁধা 

প্রফুল্ল তুমি কোথায় থাকো? 
মাঝে মাঝে গুনগুনাও 
দরজা জানালা বন্ধ থাকে। 
কিভাবে যে ঘরে ঢুকে যাও? 
জেট প্লেনের আওয়াজ ছাড়ো। 
ছুটে আসো ভীষণ রেগে। 
এই বুঝি দিলে হূল ফুটিয়ে ।
হাত দুটি যে ঢেকে দেই
তড়িৎ বেগে  সাইড মেরে। 

কিছু সময় ঘোরো  তুমি
আমাকে প্রদক্ষিণ করে 
মনে হয় যেন রাগ দেখাচ্ছো ?
বাগানে ফুটেছে অনেক গোলাপ। 
সেখানে তো তুমি গুন গুনাবে । 
আসছে ধেয়ে  মাঝে মাঝে
জেট প্লেনের শব্দ করে। 
হুল ফুটায় বিষ ঝরাবে। 
ফেলবে কি আমায় অনুরাগের জ্বরে ?

।।।।।।।।।

অভিপ্রায় 

পৃথিবীটা দেখো এক বালুকণার ভিতর 

স্বর্গ টা দেখো এক বনফুলের ভিতর। 

অনির্দিষ্ট কাল হাতের মুঠোয়

অনন্ত  পরিক্রমা এক ঘন্টায়। 

আমি নই পারদর্শী নির্দিষ্ট কোন

পরিকল্পনায় ।

শুধু আমার সঙ্গে দেখা করো 

কোথাও উন্মুক্ত প্রান্তরে 

নীল আকাশের নিচে

প্রাণবন্ত জীবন্ত হয়ে। 

।।।।।।।।।।

শম্পা বণিকের তিনটি কবিতা --

শম্পা বণিকের তিনটি কবিতা --  রোড শো ২০২১  ------------------------ আলাদিনের চিরাগ হাতে ওই আসে গণতন্ত্র রামধনু পায়রা উড়িয়ে.......